নিউজডেস্ক : অবশেষে মোবাইল ইন্টারনেটের চার্জ কমছে। আন্দোলনের নয় বছর পর এই চার্জ কমানো হচ্ছে বলে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে। ইন্টারনেট চার্জ কমানোর ফলে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৪৩ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এ সুবিধা পাবেন। সবশেষ ২০০৪ সালে মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রতি কিলোবাইটের জন্য দু’পয়সা কমিয়েছিল। জানা যায়, ইন্টারনেট প্যাকেজ মূল্য কমানোর দাবিতে ওয়েব পোর্টাল ডিয়ারজুলিয়াস ডটকম, ওয়েব পোর্টাল পিসি হেল্প লাইন বিডি, বাংলাদেশ টেলিকম সাবস্ক্রাইবার্স ফোরাম এবং আইসিটি অব বাংলাদেশ-ইয়াহু গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন আন্দোলন করে আসছে।
গত ৩০ মে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলো বিটিআরসিকে আল্টিমেন্টাম দেয় ও মানববন্ধন করে। দাবি মানা না হলে ১২ জুন বিকেল ৩টায় বিটিআরসি কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ছাড়াও ফেসবুকে চলতে থাকে ব্যাপক প্রচারণা। পরে ইন্টারনেটের চার্জ কমানোর বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহে মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে বিটিআরসি। বৈঠকে চার্জ কমানোর বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্দেশনা জারি করা হবে। বিভিন্ন প্যাকেজের চার্জ কী হারে কমতে পারে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে চার্জ কমানো হলে নতুন চার্জের হার বর্তমান প্যাকেজ চার্জের হারের ন্যূনতম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানা গেছে। আর এমন হলে স্বস্তির সুবাস ছুঁয়ে যাবে দেশের ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ৪৩ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর। যার বড় একটি অংশ তরুণ-তরুণী। সংগঠনগুলোর দাবি ছিল, প্রতি মেগা বাইট ০.১০ পয়সা এবং প্রতি গিগা বাইট ১০ টাকা হারে নির্ধারণ করা। বিটিআরসি’র সূত্র মতে, এপ্রিল মাসে ১২ লাখ নতুন গ্রাহক এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। মার্চের শেষে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ৩ কোটি ১৮ লাখ। গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট গ্রাহক ৬০ লাখ, বাংলালিংক ৯৭ লাখ, রবি ৪৪ লাখ, এয়ারটেল ২৮ লাখ, সিটিসেল ৩ লাখ ও টেলিটকের ২ লাখ ৫৫ হাজার। হিসাব বলছে- মোট ইন্টারনেট গ্রাহকের ৯৫ শতাংশই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এর বাইরে আইএসপিদের ইন্টারনেট গ্রাহক ১২ লাখ ২০ হাজার। আর দুটি ওয়াইম্যাক্সের গ্রাহক ৪ লাখ ৯০ হাজার। উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে বিদ্যমান হারে প্রতি কিলোবাইটের জন্য ২ পয়সা করে চার্জ করছে মোবাইল কোম্পানিগুলো। পরিমাণ ভিত্তিক কিছু প্যাকেজ থাকলেও সেগুলো সাশ্রয়ী নয়। অথচ গত নয় বছরে কয়েক বার ব্যান্ডউইথের দাম কমানো হয়েছে। ২০০৪ সালে প্রতি মেগাবাইট ব্যান্ডউইথের মূল্য ছিল ৭২ হাজার টাকা, বর্তমানে তা মাত্র ৬ হাজার টাকা। গত সেপ্টেম্বরে গ্রাহকদের ‘হয়রানি বা প্রতারণা’ ঠেকাতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য ১৪টি প্রস্তাবিত নির্দেশনা নিয়ে গ্রাহকের মতামত নেয় বিটিআরসি। পরে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের ফি কমানোর বিষয় ছাড়া বাকি সবগুলোর ব্যাপারে নির্দেশনা জারি করে সংস্থাটি সাত মাস আগে ইন্টারনেটের চার্জ কমানোর বিষয়ে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মতামত আহ্বান করেছিল বিটিআরসি। ওই মতামতে শতভাগ ব্যবহারকারী চার্জ কমানোর মতামত দিয়েছেন। মতামত আহ্বানের কয়েক মাস পরও বিটিআরসি ইন্টারনেটের চার্জ কমানোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আন্দোলনে নামে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সংগঠন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন